মনের ভাব প্রকাশের বাহন ভাষা। মানুষের মনের ভাব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ভাষা। মানুষ তার কণ্ঠনিঃসৃত যে ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টির মাধ্যমে ভাব ও অনুভূতি অন্যের কাছে বোধগম্যভাবে পৌঁছে দেয় তাকে ভাষা বলে। আদিমকালে মানুষ যখন গুহাবাসী, বন্য ও অসভ্য ছিল, তখনো মানুষ নিজেদের মধ্যে ভাবের আদান-প্রদান করত। তখন ভাববিনিময়ের মাধ্যম ছিল ইশারা, ইঙ্গিত, অঙ্গভঙ্গি ইত্যাদি। এগুলো ভাষা বিকাশের প্রাথমিক রূপ হিসেবে বিবেচ্য ছিল। আদি মানবের যে ভাষা ছিল, কালের প্রবাহে তা পরিবর্তিত হয়ে বহু ভাষার জন্ম দিয়েছে। এ জন্য বিভিন্ন দেশের মানুষ বিভিন্ন ভাষায় কথা বলে, যেমন—বাংলাদেশে ‘বাংলা ভাষা’, ইংল্যান্ডে ‘ইংরেজি ভাষা’, জাপানে ‘জাপানি ভাষা’, রাশিয়ায় ‘রুশ ভাষা’ ইত্যাদি। বর্তমানে পৃথিবীতে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভাষা প্রচলিত রয়েছে।
ভাষার কয়েকটি বৈশিষ্ট্যঃ
১. ভাষা কণ্ঠনিঃসৃত ধ্বনির সাহায্যে গঠিত
২. ভাষার অর্থদ্যোতকতা গুণ বিদ্যমান
৩. ভাষা একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ও ব্যবহৃত হয়
৪. ভাষা মানুষের স্বেচ্ছাকৃত আচরণ ও অভ্যাসের সমষ্টি।
৫. দেশ, কাল ও পরিবেশভেদে ভাষার পরিবর্তন ঘটে।
বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি লোক মান্দারিন ভাষায় কথা বলে।বর্তমানে পৃথিবিতে ভাষার সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার / ৩৫০০ এর উপরে। জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাংলা পৃথিবীর চতুর্থ তম ভাষা। বাংলাদেশ ছাড়াও বাংলায় কথা বলে -পশ্চিম বঙ্গের জনসাধারণ এবং বিহার, উড়িষ্যা ও আসামের কয়েকটি অঞ্চলের মানুষ। বর্তমানে পৃথিবীতে বাংলা প্রায় চব্বিশ কোটি লোকের ভাষা। বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলের জনগন যে ভাষায় কথা বলে তাকে বলে আঞ্চলিক কথ্য ভাষা / উপভাষা।
উপভাষার কথ্যরীতি সমন্বয়ে শিষ্টজনের ব্যবহৃত এ ভাষাই – আদর্শ চলিত ভাষা।পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষার রীতি-২ টি। কথ্য এবং লেখ্য।
ভাষার মৌখিক বা কথ্য রূপের আবার রয়েছে- ২ টি রীতি
(১) আদর্শ চলিত রীতি।
(২)আঞ্চলিক কথ্য উপভাষা বা আঞ্চলিক কথ্য রীতি।
লৈখিক বা লেখ্য রূপেরও রয়েছে -২ টি রীতি
(১) চলিত রীতি।
(২) সাধু রীতি।
বাঙালি জাতির উদ্ভব ও পরিচিতি সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন ।
ভাষা সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয় আলোচনা দেখুন ।